ঘাসের নাম: নেপিয়ার
নেপিয়ার এক প্রকার গ্রীষ্মকালীন স্থায়ী ঘাস। সাধারণত ২-৫ মিটার লম্বা হয়। দেখতে অনেকটা আখ (ইক্ষু, উখ) গাছের মত। এ ঘাস বাংলাদেশের মাটিতে সহজে জন্মে, খুবই পুষ্টিকর, সহজ-পাচ্য, দ্রুত বর্ধনশীল, খরা সহিষ্ণু ও উচ্চ ফলনশীন। এ ঘাস জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। এই ঘাস বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘাস এবং দেশের সকল অঞ্চলেই উৎপাদন করা যায়।
প্রাপ্তি স্থান: প্রতিটি বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের নার্সারি থেকে ঘাসের কাটিং কিংবা মোথা সহজেই পাওয়া যায়।
জমি নির্বাচন: যেখানে পানি জমে থাকে না এমন জমিতে নেপিয়ার ভাল হয়। প্রায় সব রকম মাটি তবে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী।
রোপন সময়: বৈশাখ হতে আশ্বিন । বৈশাখের প্রথম বৃষ্টিপাতের পরে লাগালে ঐবছরই ফলনের জন্য বেশী সময় পাওয়া যায়।
রোপন দূরত্ব: সারি/আইল থেকে সারি ২-৩ ফুট্ এবং গাছ থেকে গাছ ১-১.৫ ফুট।
বংশ বিস্তার: সাধারণত ঘাসের কাটিং ও মোথা দ্বারা বংশ বিস্তার করে।
চারা তৈরি: কাটিং দ্বারা পরিপক্ক গাছের কমপক্ষে তিনটি গিঁট দিয়ে কাটিং তৈরি করতে হবে। একটি পরিপক্ক নেপিয়ার ঘাসের ডালা হতে কমপক্ষে ৬-৭টি কাটিং করা যায়।
রোপন পদ্ধতি: জমিতে ৪-৫টি চাষ এবং মই দিয়ে আগাছা মুক্ত করে সারি থেকে সারি (২-৩ফুট) এবং গাছ থেকে গাছ ১-১.৫ ফুট দূরত্বে গর্ত করে ৪৫-৬০ ডিগ্রী কোণে ১টি গিঁট মাটির নিচে, মধ্যের গিঁট মাটির সঙ্গে এবং অবশিষ্ট গিঁট মাটির উপরে রেখে লাগাতে হবে। সাধারণত জৈষ্ঠ্য মাসের প্রথম বৃষ্টির পর অথবা ভাদ্র মাসের শেষ অংশে যখন কম বৃষ্টিপাত থাকে তখন কাটিং পদ্ধতিতে নেপিয়ার ঘাস লাগানো উত্তম।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি: জমি চাষের সময় একর প্রতি ৪-৫ টন গোবর, ২৬ কেজি টিএসপি এবং ২০ কেজি এমপি সার জমিতে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।
উপরি সার: প্রতিবার ঘাস কাটার পর ৭-১০ দিন পর একর প্রতি ৩০-৩৫ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
ঘাস কাটা: ঘাস লাগানোর ৬০-৭০ দিন পর প্রথম বার এবং প্রতি ৪-৫ সপ্তাহ পর পর মাটি হতে ৫-৬ ইঞ্চি উপর থেকে কাটতে হবে।