মুরগি পালন(ডিমের জন্য)

টার্কি পালন

MD.AL.MAMUN | ১৬ মে ২০২৪

টার্কি পালন

ভূমিকা:মুরগি প্রজাতির মধ্যে সব থেকে বড় মুরগি টার্কি । এক সময়ের বন্য পাখি হলেও এখন এটি একটি গৃহপালিত বড় আকারের পাখি। গৃহপালিত পুরুষজাতীয় টার্কির মাথা ন্যাড়া থাকে। সাধারণতঃ এর মাথা উজ্জ্বল লাল রঙের হয়। কখনো কখনো সাদা কিংবা উজ্জ্বল নীলাভ রঙেরও হয়ে থাকে। পুরুষ জাতীয় টার্কি গবলার বা টম নামেও পরিচিত । এগুলো গড়ে লম্বায় ১৩০ সে.মি. বা ৫০ ইঞ্চি হয়। গড়পড়তা ওজন ১০ কেজি বা ২২ পাউন্ড হতে পারে । কিন্তু স্ত্রী    জাতীয় টার্কি সাধারণত পুরুষের তুলানায় ওজনে অর্ধেক হয় । প্রতিটি স্ত্রীজাতীয় টার্কি প্রতিবার ৮থেকে ১৫টি ছোট ছোট দাগের বাদামী বর্ণাকৃতির ডিম পাড়ে । ২৮ দিন অন্তর ডিম ফুটে বাচ্চা টার্কি জন্মায়।

পুরুষ টার্কি,স্ত্রী টার্কির তুলনায় অধিকতর বড় এবং অনেক বেশি আকর্ষণীয় রঙের হয়ে থাকে। যেহেতু, বাংলাদেশে টার্কি পাখি সকাল-বিকাল সামান্য সম্পূরক খাদ্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশের খাবার যেমন শাকসবজি , লতা- পাতা পোকামাকড় পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রহণ করে , তাই এদের মাংসের গুনাবলী নিয়ে ভোক্তার মনে কোন সন্দেহ নেই।এটি গৃহে পালন শুরু হয় উত্তর আমেরিকায়। কিন্তু বর্তমানে ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশে এই পাখি কম বেশী পালন করা হয় । বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টার্কি পাখির মাংস বেশ জনপ্রিয় । পাখির মাংসের মধ্যে হাঁস, মুরগী, কোয়েল , তিতির এর পর টার্কির অবস্থান । টার্কি বর্তমানে মাংসের প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। এর মাংসে প্রোটিন বেশী , চর্বি কম এবং আন্যান্য পাখির মাংসের চেয়ে বেশী পুষ্টিকর। পশ্চিমা দেশগুলোতে টার্কি ভীষণ জনপ্রিয় । তাই পশ্চিমা দেশে টার্কি বাণিজ্যিকভাবে পালন করা হয় এবং এর মাংস খুবই জনপ্রিয় । বাংলাদেশে টার্কি পালন সম্প্রতি শুরু হলেও খুব দ্রুত ক্ষুদ্র ও মাঝারী খামারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বাংরাদেশে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সহজেই খাপ খাওয়ানো সত্যিই চোখে পড়ার মত।

টার্কি পালনের সুবিধাসমূহ

১.মাংস উৎপাদন ক্ষমতা ব্যাপক;

২.এটা ঝামেলাহীনভাবে দেশী মুরগির মত পালন করা যায়;

৩.টার্কি ব্রয়লার মুরগীর চেয়ে দ্রুত বাড়ে;

৪.টার্কি পালনে তুলনামূলক খরচ অনেক কম, কারণ এরা দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি ঘাস, লতাপাতা খেতেও পছন্দ করে;

৫.টার্কি  দেখতে সুন্দর , তাই বাড়ির শোভা বর্ধন করে;

৬.টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশী , চর্বি কম। সাধারণত ২-৩%,যা আমাদের দেশী মুরগি বা তিতির পাখির সাথে তুলনীয় । তাই গরু কিংবা খাসীর মাংসের বিকল্প হতে পারে টার্কির মাংস;

৭.টার্কির মাংসে অধিক পরিমাণ জিংক, লৌহ, পটাশিয়াম,ভিটামিন বি-৬ ও ফসফরাস থাকে। এ উপাদানগুলো মানব শরীরের জন্য ভিষণ উপকারী এবং নিয়মিত এই মাংস খেলে কোলেস্টেরেল কমে যায়;

৮.টার্কির মাংসে এমাইনো এসিড  ট্রিপটোফেন অধিক পরিমাণে থাকায় এর মাংস খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়;

৯.টার্কির মাংসে ভিটামিন-ই অধিক পরিমাণে থাকে।

টার্কির প্রজাতি/জাত:- 

০১.ব্রড ব্রেস্টেড ব্রোঞ্জ : পালকের মূল রং কালো, তামাটে হয়। মাদী পাখির বুকের পালকের রং কালো ও তার ডগাগুলি সাদা হয়, যার দরুণ মাত্র ১২ সপ্তাহ বয়সেই লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায়।

০২.ব্রড ব্রেস্টেড হোয়াইট: এটি ব্রড ব্রেস্টেড ব্রোঞ্জ ও হোয়াট হল্যান্ডে সংকর যার পালকগুলি সাদা হয় । সাদা পালকের টার্কির গরম সহ্য করার ক্ষমতা বেশি ও সেই সঙ্গে পালক ছাড়ানোর পরে এদের পরিষ্কার ও ভাল দেখায়।

০৩. বেল্টসভিল স্মল হোয়াইট : এটি রং ও আকারে ব্রড ব্রেস্টেড হোয়াইট প্রজাতির খুবই কাছাকাছি তবে আয়তনে ছোট। ভারী প্রজাতিগুলির তুলনায় এদের ডিম দেওয়া, উর্বরতা ও ডিম ফোটার পরিমাণ বেশী হয় এবং ডিমে তা দেওয়ার ঝোঁক কম হয় ।

৪. নন্দনম টার্কি: নন্দনম টার্কি প্রজাতিটি কালো দেশী প্রজাতি ও বিদেশী বেল্টসভিল স্মল হোয়াইট প্রজাতির শংকর।

টার্কির খাবার দেওয়ার পদ্ধতি :

০১.মুরগির তুলনায় টার্কির শক্তি, প্রোটিন ও খনিজের প্রয়োজন বেশি;

০২.যেহেতু পুরুষ ও মাদীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শক্তির (এনার্জি) পরিমাণ আলাদা , তাই ভাল ফল পাওয়ার জন্য তাদের পৃথক ভাবে পালন করতে হবে;

০৩.খাবার ফীডারে দিতে হবে, মাটিতে নয়;

০৪. যখনই এক রকম খাবার থেকে অন্য খাবারে পরিবর্তন করা হবে তা যেন আস্তে আস্তে করা হয়;

০৫. টার্কিদের সব সময় অবিরাম পরিষ্কার জলের জোগান দরকার হয়;

০৬.গ্রীষ্মকালে আরও বেশী সংখ্যায় পানির পাত্র রাখুন;

০৭.গ্রীষ্মকালে দিনের অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা সময়ে টার্কিদের খাবার দিন;

০৮.পায়ের দুর্বলতা এড়াতে দিনে ৩০-৪০ গ্রাম হারে ঝিনুকের খোসার গুঁড়ো দিন।

সবুজ খাদ্য : নিবিড় পদ্ধতিতে,ড্রাই ম্যাশ হিসাবে মোট খাদ্যের ৫০% পর্যন্ত সবুজ খাবার দেওয়া যায় । সব বয়সের টার্কির জন্য টাটকা লুসার্ন প্রথম শ্রেণীর সবুজ খাদ্য ।এছাড়া খাবারের খরচ কম করার জন্য ডেসম্যান্থাস ও স্টাইলো কুচি করে টার্কিদের খাওয়ানো যেতে পারে।

টার্কির বাচ্চা পালন পদ্ধতি : টার্কির ০-৪ সপ্তাহ বয়সকে ব্রুডিং পিরিয়ড বলা হয় । তবে শীতকালে ব্রুডিং পিরিয়ড বাড়িয়ে ৫-৬ সপ্তাহ করা হয়ে থাকে। সাধারণভাবে মুরগীর তুলনায় টার্কির দ্বিগুণ হোভারের জায়গা লাগে । এক দিন বয়সের বাচ্চাদের ব্রুডিং এর জন্য অবলোহিত আলোর বাল্ব বা গ্যাস ব্রুডার ও চিরাচরিত ব্রুডিং ব্যবস্থা ব্যবহার করা যায়।

১. ০-৪ সপ্তাহের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গার মাপ ,পাখি প্রতি ১.২৫ বর্গফুট;   

২.বাচ্চা এসে পৌঁছানোর অন্তত দু’দিন আগে ব্রুডিং হাউস তৈরী রাখতে হবে;

৩. ২ মিটার ব্যাস জুড়ে গোলাকারে লিটার বিছিয়ে রাখতে হবে;

৪.বাচ্চারা যাতে তাপের উৎস থেকে দূরে চলে না যায় তাই অন্তত ১ ফুট উচ্চতার একটি বেড়া রাখতে হবে;

৫.প্রারম্ভিক তাপমাত্রা ৯৫ ডি.ফা.রাখতে হবে যা প্রতি সপ্তাহে ৫ ডি.ফা. করে কমাতে হবে যতদিন না বাচ্চাদের বয়স ৪ সপ্তাহ হয়;

৬.অগভীর জলপাত্র ব্যবহার করতে হবে;

৭.প্রথম চার সপ্তাহে গড় মৃত্যুহার থাকে (৩-৪)%। বাচ্চা স্বভাবতই জন্মের পরে প্রথম কয়েকদিন কিছু খেতে বা পান করতে চায় না , মূলত কম/অপ্রতুল দৃষ্টিশক্তি ও ভয় পাওয়ার কারণে । এইজন্য , তাদের জোর করে খাওয়াতে হয়।

টার্কি পালনের অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য :

ডিম দেয়া শুরুর বয়স/প্রাপ্ত বয়স

২৪-৩০ সপ্তাহ

পুরুষ ও স্ত্রীর অনুপাত

১:৪

বছরে গড় ডিম

১০০-১২০ টি

ডিমের ওজন ও হ্যাচাবিলিটি

৬০-৭০ গ্রাম ও ৭৫-৮৫%

ডিম ফুটে বাচ্চা বেড় হয়

২৮ দিনে

১ দিন বয়সের বাচ্চার ওজন

৫০ গ্রাম

২০ সপ্তাহে গড় ওজন পুরুষ পাখি

৭ থেকে ৮ কেজি

২০ সপ্তাহে গড় ওজন স্ত্রী পাখি

৪ থেকে ৫ কেজি

বাজারজাত করণের সঠিক সময় পুরুষ পাখি

১৪ থেকে ১৫ সপ্তাহ

বাজারজাত করণেলর সঠিক সময় স্ত্রী পাখি

১৭ থেকে ১৮ সপ্তাহ

উপযুক্ত ওজন পুরুষ পাখি

৮ থেকে ১০ কেজি

উপযুক্ত ওজন স্ত্রী পাখি

৫ থেকে ৬ কেজি

 

টার্কির খাবার : টার্কির খাবার সরবরাহের জন্য দুইটি পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। যেমন-ম্যাশ ফিডিং ও পিলেট ফিডিং। একটি পূর্ণ বয়স্ক টার্কির দিনে ১৪০-১৫০ গ্রাম খাবার দরকার হয়। যেখানে ৪৪০০-৪৫০০ ক্যালোরি নিশ্চিত করতে হবে।

একটি আদর্শ খাদ্য তালিকা নিচে দেয়া হলো:

ক্রমিক নং

উপাদান

শতকরা হার

১.

ধান

২০%

২.

গম

২০%

৩.

ভুট্টা

২৫%

৪.

সয়াবিন মিল

১০%

৫.

ঘাসের বীজ

৮%

৬.

সূর্যমুখী বীজ

১০%

৭.

ঝিনুক গুড়া

৭%

 

মোট

১০০%

 

জোর করে খাওয়ানো: বাচ্চাদের অল্প দিনের মধ্যে মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ অভুক্ত থাকা। তাই খাদ্য ও জল সরবরাহের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে । জোর করে খাওয়ানোর ক্ষেত্রে প্রতি লিটার পানিতে ১০০ মিলি হারে দুধ মিশিয়ে খাওয়াতে হবে এবং পনেরো দিন পর্যন্ত প্রতি ১০টি বাচ্চার জন্য একটি ডিম সিদ্ধ দিতে হবে। এটি বাচ্চাদের প্রোটিন ও এনার্জির প্রয়োজন মেটাবে।

খাবারের পাত্রটিকে আলতো করে আঙুল দিয়ে ঠুকে বাচ্চাদের খাবারের দিকে আকৃষ্ট করা যেতে পারে । ফীডার এবং ওয়াটারারে রঙিন মার্বেল বা নুড়ি পাথর রাখলেও বাচ্চারা সেদিকে আকর্ষিত হবে। যেহেতু টার্কিরা সবুজ শাকপাতা ভালবাসে , তাই খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কিছু কচি সবুজ পাতাও খাবারে মেশাতে হবে । এই সঙ্গে প্রথম ২ দিন রঙিন ডিমের পাত্রকেও ফীডার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সতর্কতা : অন্যান্য পাখির তুলনায় টার্কির জন্য বেশী ভিটামিন, প্রোটিন, আমিষ, মিনারেলস দিতে হয় । কোন ভাবেই মাটিতে খাবার সরবরাহ করা যাবে না । সব সময় পরিষ্কার পানি দিতে হবে।

সবুজ খাবার : সব সময় মোট খাবারের সঙ্গে ৫০% সবুজ ঘাস খেতে দিলে ভালো। সে ক্ষেত্রে নরম জাতীয় যে কোন ঘাস হতে হবে । যেমন কলমি,হেলেঞ্চা ইত্যাদি। তবে বেশি শীত পড়লে অনেক সময় সবুজ ঘাস বেশি খাওয়ালে সর্দি হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

প্রজনন ব্যবস্থা : একটি টার্কি মুরগির জন্য ৪ বর্গফুট জায়গা নিশ্চিত করতে হবে। ঘরে পর্যাপ্ত আলো ও বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। একটি মোরগের সঙ্গে ৪ টি মুরগি রাখা যেতে পারে। ডিম সংগ্রহ করে আলাদা জায়গায় রাখতে হবে। ডিম প্রদান কালীন সময়ে টার্কিকে আদর্শ   খাবার এবং বেশী পানি দিতে হবে।

বাচ্চা ফুটানো : টার্কি নিজেই ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায় । তবে দেশী মুরগী অথবা ইনকিউবেটর দিয়ে বাচ্চা ফুটালে ফল ভালো পাওয়া যায় । তাছাড়া বাচ্চা উৎপাদনের জন্য সময় নষ্ট না হওয়ার কারণে টার্কিও ডিম উৎপাদন বেশী করে ।

রোগ বালাই : রানীক্ষেত,ফাউলপক্স, সালমোনেলোসিস , ফাউল কলেরা, মাইটস ও এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বেশী দেখা যায় । পরিবেশ ও খামার অব্যবস্থাপনার কারণে অনেক রোগ সংক্রমণ হতে পারে।

টিকা প্রদান:

রোগের নাম

টিকার নাম

টিকা প্রয়োগের বয়স

১. রানীক্ষেত

বি.সি.আর.ডি.ভি

৫-৭ দিন বয়সে ১ম ডোজ,১৮- ২১ দিন বয়সে ২য় ডোজ

২.ফাউল পক্স

ফাউল পক্স টিকা

২৫-২৮ দিন বয়সে

৩.রানীক্ষেত

আর.ডি.ভি

২ মাস বয়সে

ফাউল কলেরা

ফাউল কলেরা টিকা

৭৫ দিন বয়সে

 

১. কোন অবস্থায় রোগাক্রান্ত পাখিকে টিকা দেয়া যাবে না । টিকা প্রয়োগ করার পূর্বে টিকার গায়ে দেয়া তারিখ দেখে নিবেন। মেয়াদ উত্তীর্ণ টিকা প্রয়োগ করবেন না ।

২. এছাড়া নিয়ম মাফিক,পরিচ্ছন্ন খাদ্য ও খামার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অনেক রোগ বালাই এড়িয়ে চলা সম্ভব।

বাসস্থান ব্যবস্থা : মুক্ত,আধামুক্ত ও বদ্ধ অবস্থায়-পালন করা যায়। ০-৪ সপ্তাহের টার্কি প্রতি ১.২৫ বর্গফুট,৫-৬ সপ্তাহের টার্কি প্রতি ২.৫ বর্গফুট এবং বয়স্ক টার্কি প্রতি ৩.৫ বর্গফুট বাসস্থান প্রয়োজন।

বাজার সম্ভাবনা :

১. টার্কির মাংস পুষ্টিকর ‍ও সুস্বাদু হওয়ায় এটি খাদ্য তালিকার একটি আদর্শ মাংস হতে পারে। পাশাপাশি দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মাংসের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যাদের অতিরিক্ত চর্বি যুক্ত মাংস খাওয়া নিষেধ অথবা যারা নিজেরাই এড়িয়ে চলেন, কিংবা যারা গরু/খাসীর মাংস খায়না, টার্কি তাদের জন্য হতে পারে প্রিয় একটি বিকল্প। তাছাড়া বিয়ে,বৌ-ভাত, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাসীর/গরুর মাংসের বিকল্প হিসেবে টার্কির মাংস হতে পারে অতি উৎকৃষ্ট একটি খাবার এবং গরু/খাসীর তুলনায় খরচও হবে কম ।

২.অন্যান্য পাখির তুলনায় এটির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি বিধায় টিকাদান এবং ঔষধের খরচ অতি নগণ্য। খোলা অবস্থায় পালন করলে শাকসবজি , আগাছা ও পোকামাকড় খেতে পারে বলে, খাদ্য খরচ তুলনামূলক কম । এ ছাড়াও এটি রপ্তানীর সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।

৩. বাণিজ্যিক খামার করলে এবং মাংস হিসেবে উৎপাদন করতে চাইলে ১৪/১৫ সপ্তাহে একটি টার্কির গড় ওজন হবে ৫/৬ কেজি । ৪০০ টাকা কেজি দর হিসেব করলে একটি টার্কির বিক্রয় মূল্য দাঁড়াবে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা। ১৪ থেকে ১৫ সপ্তাহ পালন করতে সর্বোচ্চ খরচ পরবে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। তাহলে কম পক্ষে একটি টার্কি থেকে ৫০০ টাকা লাভ করা সম্ভব।