আবহমান কাল হতে বাংলাদেশে শিং ও মাগুর মাছ অত্যন্ত জনপ্রিয় মাছ হিসেবে পরিচিত। এসব মাছ খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। সুদূর অতীতে এ মাছগুলি প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের জলাশয়ে প্রচুর পাওয়া যেত। উচ্চ বাজার মূল্য থাকায় শিং- মাগুর মাছ চাষিদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
পুকুর প্রস্তুতি
চুন ও সার প্রয়োগ
পানির রাসায়নিক গুণাগুণ বজায় রাখার জন্য পুকুরে পাথুরে চুন প্রয়োগ করতে হয়। দোআঁশ মাটির জন্য ১ কেজি/শতক এবং এঁটেল মাটির জন্য ২ কেজি/শতক।
চুন প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক সার নিন্মেবর্ণিত হারে প্রতি শতকে প্রয়োগ করতে হবে:
ইউরিয়া |
টিএসপি |
খৈল |
১০০-১২০ |
১২০-১৫০ |
৫০০-৭০০ |
নার্সারী পুকুরে পোনা মজুদ
সঠিক উপায়ে নার্সারী প্রস্তুত করে ৮-৯ দিন বয়সের ৬০০০-৮০০০ টি ধানী পোনা মজুদ করতে হবে। প্রাকৃতিকভাবে প্রতিদিন পোনার দেহের ওজনের দ্বিগুন হারে ২-৩ বার নার্সারী ফিড দিতে হবে। ধানী পোনা ছাড়ার ৩০-৪০ দিনের মধ্যে ২-৩ ইঞ্চি চারা/আঙ্গুলি পোনায় পরিণত হয় যা পুকুরে ব্যবহার উপযোগী।
লালন পুকুরে পোনা মজুদ
ভালভাবে চুন-সার দিয়ে পুকুর প্রস্তুত করে চারা পোনা লালন পুকুরে মজুদ করতে হবে। লালন পুকুরের চারদিক মশারী জাল দিয়ে বেড়া দিতে হবে।
প্রজাতি |
আকার |
সংখ্যা |
শিং-মাগুর |
২-৩ ইঞ্চি |
৩০০-৫০০ |
মজুদ কালীন সার প্রয়োগ
মজুদকালীন সময়ে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য না থাকলে প্রতি সপ্তাহে নিন্ম হারে প্রতি শতকে সার প্রয়োগ করতে হবে:
ইউরিয়া |
টিএসপি |
খৈল |
৩০ গ্রাম |
২০ গ্রাম |
১০০ গ্রাম |
মজুদ পরবর্তী মাছের দেহের ওজনের ৫-৬% হারে ৩০-৩৫% আমিষ সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। বাজারে শিং-মাগুরের আলাদা খাবার পাওয়া যায়।
আহরণ ও বিক্রয়
শিং ও মাগুর মাছ সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করলে ৬-৭ মাসেই বাজারজাতকরণের উপযোগী হয়। এ সময় শিং মাছের গড় ওজন ৭৫-১০০ গ্রাম এবং ৯০-১০০ গ্রাম হয়ে থাকে।