মাছ চাষ

আবদ্ধ পদ্ধতিতে বাগদা চিংড়ির আধা-নিবিড় চাষ

Jakia sultana | ১৬ মে ২০২৪

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ঘেরে ১৯৯৪ সালে ভাইরাস রোগের প্রাদুর্ভাবের ফলে আধা নিবিড় বাগদা চিংড়ি চাষ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। এতে চিংড়ির সার্বিক উৎপাদন ব্যাহত হয়। এই চাষ পদ্ধতি পুনরায় শুরু করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে আবদ্ধ পদ্ধতিতে বাগদা চিংড়ির আধা-নিবিড় চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ভাইরাসমুক্ত অবস্থায় বাগদা চিংড়ি চাষ করা অনেকাংশে সম্ভব।

আবদ্ধ পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ কি

  • রোগের সংক্রমন প্রতিহত করার জন্য গতানুগতিক পদ্ধতির ন্যায় ঘেরের পানি পরিবর্তন না করে পানিকে ঘেরে আবদ্ধ রেখে উক্ত পানিতে চিংড়ি চাষের পদ্ধতিকে আবদ্ধ পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ বলে অভিহিত করা হয়।

আবদ্ধ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য

  • কোন পানি পরিবর্তন না করা। প্রতি ঘেরে একটি জলাধারের ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনে জলাধার হতে পরিশোধিত পানি ব্যবহার করা।
  • পানির গভীরতা ১.০ মিটার এর অধিক রাখার ব্যবস্থা করা। বাহিরের জোয়ার কিংবা পার্শ্ববর্তী ঘেরের পানি কোনভাবেই যাতে ঘেরে ঢুকতে না পারে সে ব্যবস্থা করা।
  • কোন জৈব সার ব্যবহার না করা। ঘেরে জৈব পদার্থের পরিমান নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পরিমিত খাদ্য প্রয়োগ করা।
  • ঘেরে জমাকৃত জৈব পদার্থের বিরুপ প্রতিক্রিয়া প্রতিহত করার জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
  • জলজ আগাছা, ব্যাকটেরিয়া ও ক্ষতিকারক গ্যাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ঘেরের পরিবেশের ভারসাম্য বাজায় রাখা।
  • ঘেরের মাটি ও পানির বাফার ক্ষমতা , পি-এইচ ও ক্ষারত্বসহ অন্যান্য ভৌত-রাসায়নিক গুণাবলীসমূহ স্থিতিশীল রাখা।
  • চাষকালীন সময়ে পানিতে পর্যাপ্ত প্লাঙ্কটন (প্রাকৃতিক খাদ্যকণা) এর উপস্থিতি নিশ্চিত করা।

 

ঘের প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা

  • ঘেরের পাড় নির্মাণ: ঘেরের পাড় শক্ত ও উঁচু হতে হবে যাতে প্রয়োজনে প্রায় ১.৫মি. উচ্চতায় পানি ধরে রাখা যায়। পাড়ে কাঁকড়া বা ইঁদুরের গর্ত থাকলে তা ভালভাবে বন্ধ করতে হবে।
  • জলাধার নির্মাণ মোট চাষ এলাকার ১৫-২০% এলাকায় একটি জলাধার নির্মাণ করতে হবে, যাতে প্রয়োজনে জলাধার হতে পরিশোধিত পানি সহজে চাষের ঘেরে সরবরাহ করা যায়।
  • ঘের শুকানো: সমস্ত জলজ আগাছা পরিস্কার করে ঘের এমনভাবে শুকাতে হবে যাতে ঘেরের মাটি ফেটে না যায় এবং যে কেউ ঘেরের উপর দিয়ে হাটলে পায়ের হালকা ছাপ মাটিতে পড়ে।
  • তলার মাটি সরানো: মাটির উপরে জমকৃত ৬-৮ সে.মি. এর অতিরিক্ত কাদা সরিয়ে ফেলতে হবে।
  • চুন প্রয়োগ : হেক্টর প্রতি ২৫০ কেজি হারে ডলোচুন ও পাথুরে চুন এর মিশ্রণ (৩:১) খুব সকালে ছিটিয়ে দিতে হবে। পুকুরের তলা হতে পাড়ের উপারিভাগ পর্যন্ত চুন ছিটাতে হবে।
  • মাটি চাষ : ঘেরের উপরের ৬-৮ সে.মি. মাটি চাষ করে চুন ভালভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
  • ঘেরে প্রবেশ প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ ঘেরের চারিদিকে ছোট ফাঁসের নাইলনের জাল দিয়ে প্রায় ১মি. উঁচু করে এমনভাবে ঘেরা দিতে হবে যাতে কোন সাপ, ব্যাঙ কিংবা অন্য যে কোন ক্ষতিকর প্রাণী ঘেরে প্রবেশ করতে না পারে।
  • নার্সারী স্থাপন : ঘেরের এককোণে ঘেরের ৫-৭% এলাকায় বাঁশের ফ্রেম ও ছোট ফাঁসের নাইলনের জাল দিয়ে প্রায় ১.৫ মি. উঁচু করে ঘিরে একটি নার্সারী তৈরী করতে হবে। ঘেরে পানি ঢুকানোর পর নার্সারীর ভিতরে পোনার আশ্রয় হিসাবে কয়েকটি নাইলনের জাল লম্বালম্বি ও খাড়া করে ঝুলিয়ে দিতে হবে।
  • পানি সরবরাহ : পার্শ্ববর্তী নদী বা খাল হতে ছেঁকে প্রয়োজনীয় লবনাক্ত পানি ( কমপক্ষে ১.০মি.) ঘেরে প্রবেশ করাতে হবে।
  • সার প্রয়োগ : চুন প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর ইউরিয়া ৬০ গ্রাম, টিএসপি ৩০ গ্রাম প্রয়োগ করা যেতে পারে।
  • পানিতে বাতাস সরবরাহের ব্যবস্থা : ঘেরের চারদিকে পাড় হতে ২.০-২.৫ মিটার দূরত্বে একটি করে পেডেল হুইল স্থাপন করতে হবে। ১,৫০০-২,০০০ বর্গ মিটার আয়তনের প্রয়োজনীয় বাতাস সরবরাহ করা যেতে পারে।

পোনা মজুদ

  • ব্যবস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে প্রতি ব.মি. এ ১০-১২টি সুস্থ ও সবল ভাইরাসমুক্ত বাগদা চিংড়ি পোনা মজুদ করা অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে লাভজনক এবং পরিবেশ টেকসই।
  • প্রয়োজনীয় সংখ্যাক পোনা নার্সারীতে মজুত করতে হবে। ১৫-২০ দিন প্রতিপালনের পর নার্সারীরর ঘেরা জাল তুলে দিলে চিংড়ি সম্পূর্ণ ঘেরে ছড়িয়ে যাবে।

খাদ্য সরবরাহ

  • নার্সারীতে পোনা মজুদের পর দৈনিক ৬ ঘণ্টা অন্তর ১ম, ২য় এবং ৩য় সপ্তাহে মোট পোনার ওজনের যথাক্রমে ১০০-১২৫%, ৮০% এবং ৬০% হারে নার্সারী খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে।
  • সম্পূর্ণ ঘেরে পোনা অবমুক্ত করার পর অর্থাৎ চাষের ৪র্থ, ৫ম এবং ৬ষ্ঠ সপ্তাহ পর্যন্ত দৈনিক ৬ ঘণ্টা অন্তর মোট পোনার ওজনের যথাক্রমে ৩০%, ২০% এবং ১০% হারে খাদ্য ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
  • এরপর চাষের ৭০-৭৫ দিন পর্যন্ত দৈনিক ৬ ঘন্টা অন্তর এবং পরবর্তী দিনসমূহে দৈনিক ৭ঘণ্টা অন্তর খাদ্যের অপচয়রোধ “চাহিদানুযায়ী খাদ্য সরবরাহ” পদ্ধতিতে মজদকৃত চিংড়িকে ট্রেতে খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে ট্রেতে অতিরিক্ত খাবার অবশিষ্ট না থাকে।
  • খাদ্য প্রয়োগের পর আনুমানিক এক ঘন্টা প্যাডেল হুইল কিংবা পাম্প চালানো যাবে না।
  • চিংড়ির স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য ৩৫-৪০% আমিষ, ২০-৩০%শর্করা, ৫-১০%ফ্যাট ও ১-২% ভিটামিন ও মিনারেল প্রিমিক্স সমৃদ্ধ পিলেট খাবার প্রয়োজন।

বাতাস/অক্সিজেন সরবরাহ

  • ঘেরে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা ৪ পিপিএম এ নেমে এলে পেডেল হুইল কিংবা পাম্প চালিয়ে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • এছাড়া জমাকৃত জৈব পদার্থসমূহ যাতে না প৭চে তাড়াতাড়ি প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা করতে পারে, সেজন্য অন্ততঃ দৈনিক কয়েক ঘণ্টা পেডেল হুইল/পাম্প চালাতে হবে।

পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন

  • পানি সরবরাহের প্রয়োজন হলে জলাধারের পানি পরিশোধথন করে ৮-১০ দিন পর ঘেরে সরবরাহ করতে হবে। ঘেরের কোন পানি পরির্তন করা যাবে না।

চুন ও সার প্রয়োগ

  • পি-এইচ ৭.৫ এর নীচে নেমে গেলে বিংবা সকাল ও বিকালের পি-এইচ এর মাত্রা ০.৫ এর বেশী হলে অবশ্যই চুন প্রয়োগ করতে হবে। এ অবস্থায় প্রতি হেক্টরে ১০-১৫ পিপিএম হারে ডলোচুন প্রয়োগ করা যেতে পারে।
  • পানির স্বচ্ছতা ৩ সে.মি. বেশী হলেই ১.০-১.২ পিপিএম ইউরিয়অ এং ১.৫-১.৮ পিপিএম টিএসপি প্রয়োগ করা যেতে পারে।

আগাছা নিয়ন্ত্রন

  •  যে কোন ধরণের জলজ আগাছা আধা-নিবিড় চিংড়ি চাষে একটি বিশেষ প্রতিবন্ধকতা। কারণ জলজ আগাছা জন্মালে ঘেরের পানির গুণগতমান সহনীয় পর্যায়ে রাখা অসম্বব হয়ে পড়ে। তাই দৈনিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কায়িক শ্রম দ্বারা আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।

ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণ

  • ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণে পুকুরের জমকৃত জৈব পদার্থ, পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন, পিা-েএইচ ও তাপমাত্র বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পানিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও জৈব পদার্থের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে  থাকলে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বংশ বৃদ্ধির সুযোগ পায় না। এন্টিবায়োটিক্স প্রয়োগের মাধ্যমে ঘেরে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার কার্যকারিতা নষ্ট করা যায়। কিন্তু সঙ্গত কারণে চিংড়ি পুকুরে বিষাক্ত এন্টিবায়োটিক্স ব্যবহারের উপর বিধি-নিষেধ রয়েছে। তাই ঘেরে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কমিয়ে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ানোর জন্য  রায়াসনিক পদ্ধতি এবং জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।

রাসায়নিক পদ্ধতি

  • পুকুরে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ য়িন্ত্রণের জন্য চাষের ৪০-৪৫ দিন পর হতে প্রতি মাসে একবার ৪-৬ পিপিএম হারে ব্লিচিং পাউডার প্রয়োগ করতে হবে। এত সব ধরণের ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কমে যাবে।

জৈব প্রযুক্তি

  • ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রোবায়োটিক্স ব্যবহার করা যেতে পারে। সাধারণত চাষের ৪০-৪৫ দিন পর থেকে ব্লিচিং প্রয়োগরে দু’দিন পর ১.০-১.৫ পিপিএম হারে প্রোবায়োটিক্স প্রয়োগ করা যেতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় যে, ৭০-৮০ দিন চাষের পর অতিরিক্ত জৈব পদার্থ জমা হওয়ার ফলে ঘেরের মাটিতে বিভিন্ন প্রকার গ্যাস তৈরী হয়ে মাটির রং কালচে হেয় যায়। এমতহাবস্থায়, ১.৫-২.০ পিপিএম হারে প্রোবায়েঅটিক্স বেলে মাটির সাথে মিশিয়ে মন্ড করে ঘেরে সরবরাহ করলে সুফল পাওয়া যায়।

পানিতে দ্রবীভূত ক্ষতিকারক গ্রাস নিয়ন্ত্রণ

ঘেরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ছাড়া ও চিংড়ির জন্য ক্ষতিকারক বিভিন্ন ধ রণের গ্রাষ (অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইড ইত্যাদি) তৈরী হয়ে পানিতে দ্রবীভূত হয়। পুকুরের পরিবেশ সুস্থ রাখার স্বার্থে পানিতে যাতে কোনভাবেই ক্ষতিকারক গ্যাসসমূহের মাত্রা বৃদ্ধি না পায়, সেজন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এসবচ ক্ষতিবারক গ্যাস নিয়ন্ত্রণের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে।

 

  • চাষের দু’মাস পর থেকে অন্তত মাসে একবার ৩০-৪০% পানি পরিবর্তন করলে পুকুরে প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এক্ষেত্রে আবশ্যই জলাধারের পরিশোধিত পানি ব্যবহার করতে হবে। তবে দিনে ১০-১৫% এর বেশি পানি পরিবর্তন করা উচিত হবে না।  এতে চিংড়ি পীড়িত হতে পারে।
  • পুকুরে কোন প্রকার জৈব সার প্রয়োগ হতে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে।
  • পুকুরে সম্পূরক খাদ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় অধিকতর গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ অপরিমিত সম্পূরক খাদ্য ব্যবহারে পুকুরে জৈব পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং পানি দূষিত হয়।
  • পানিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন এর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
  • অ্যামোনিয়অর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের জন্য চাষের ৫০ দিন পর থেকে প্রতি মাসে ৩.০-৪.০ পিপিএম হারে জিওলাইট ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • পুকুরে প্লাঙ্কটন উদপাদনের সহনশীল মসাত্রা বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
  •  

চিংড়ি বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা

  • চাষকালীন সময়ে সপ্তাহে একবার চিংড়ির বৃদ্ধি পরীক্ষা এবং দৈনিক অন্ততঃ একবার চিংড়ির ওজন স্বাভাবিক আছে কি না এবং চিংড়ির খাদ্যনালীতে পর্যাপ্ত খাদ্য আছে কি না তা পরীক্ষা করা যেতে পারে। এ সময়ে চিংড়ির গায়ে কোন রোগের চিহ্ন আছে কি না তাও পরীক্ষা করা যেতে পারে।
  • কোন চিংড়ি পাড়ের কাছাকাছি স্থির ভাবে বসে থাকলে বুঝতে হবে যে ঢ়েরে কোন অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায়, অবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য তড়িৎ পদক্ষেপ নিতে হবে  এবং পাড়ে বসে থাকা চিংড়িটি ধরে ভালভাবে পর্য়বেক্ষণ করতে হেব।
  • রোগ প্রতিরোধের স্বার্থে পরিশোধিত ব্যতীত কোনক্রমেই এক ঢ়েরে ব্যবহৃত জিনিষপত্র অন্য ঘেরে ব্যবহার করা যাবে না।

উৎপাদন

এই পদ্ধতিতে ১২০ দিন লালন করার পর প্রতি ব.মি. এ ১০টি ঘনত্বে চিংড়ির গড় ওজন ৩০ গ্রাম এবং বাঁচার হার ৭৫% হিসাবে প্রতি হেস্টচরে মোট ২,২৫০ কেজি চিংড়ি উৎপাদন পাওয়া সম্ভব। শতকরা ২০ ভাগ জলাধপারের আয়তন বিবেচনা করলে প্রুিত হেস্টরে উৎপাদন দাঁড়াবে ১,৮৭৫ কেজি। একই পদ্ধতিতে প্রতি বর্গ মিটারে ১৫টি মজুদ ঘনত্বে চাষী পর্যায়ে চাষ করে হেক্টর প্রতি ২,৫০০ কেজি উৎপাদন পাওয়া যায়।

আয় ও ব্যয়

এক হেক্টর ঘেরে প্রতি বর্গ মিটারে ১০টি মজুদ ঘনত্বে চিংড়ি চাষ করে সর্বমোট আয় উৎপাদন খরচ হবে টা. ৪,০০,৮২০/- এবং উৎপাদিত চিংড়ি বিক্রি করে মোট আয় হবে টা. ৯,৭৮.০০০/- অর্থাৎ এক হেক্টর জমি হতে এক মৌসুমে (৫-৬ মাস) টা. ৫,৭৭১৮০/- নীট মুনাফা অর্জিত হবে। পানিতে দীর্ঘস্থায়ীত্ব  সম্পন্ন উন্নত মানের দেশীয় চিংড়ি খাদ্য সহজলভ্য হলে উৎপাদন ব্যয় আরও ২০% কমানো সম্ভব।

পরামর্শ

  • চিংড়ি আহরণের পর ঘেরের জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ পানি ও তলায় পুঞ্জিভূত জৈব পদার্থ বাইরে বের না করে পুকুরেই রিসাইক্লিং করার জন্য ফসল চক্র ভিত্তিক চাষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
  • এজন্য দ্বিতীয় ফসলে আবর্জনা ও উদ্ভিদভোজী মাছ চাষ করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
  • অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ফসলচক্রভিত্তিক চাষ ততটা লাভজনক না হলেও পরিবেশ সহনীয় ও টেকসই প্রযুক্তি হিসাবে আবদ্ধ পদ্ধিতির চাষে ফসল চক্রের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।