দুধের উপকারিতা
দৈনিক এক গ্লাস ফুটানো তরল দুধ পান করুন
flidmofl1 |
০২ জানুয়ারী ২০২৫
বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে এবং মেধাবী জাতি বিনির্মাণে দুধের চেয়ে ভালো খাবার আর নেই। মানবজীবনের শুরু হয় দুধ দিয়ে এবং শিশু কিশোরসহ সব বয়সের মানুষের জন্য দুধ ভীষণ প্রয়োজনীয় খাবার। দুধে ভিটামিন সি ছাড়া সব ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। গর্ভাবস্থায় ও মাতৃদুগ্ধদানকালে প্রত্যেক নারীর প্রতিদিন অন্তত এক কাপ দুধ খাওয়া উচিত। যাঁরা দুধ হজম করতে পারেন না, তাঁদের উচিত দুধ দিয়ে তৈরি খাবার যেমন: সেমাই, পুডিং, পায়েস, দুধসুজি, দুধভাত, দুধমুড়ি, দই, ঘোল, পনির ইত্যাদি খাওয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, একজন মানুষকে গড়ে দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধ পান করা উচিৎ।
দুধ পানের উপকারিতা
- দুধ সকল বয়সের জন্য একটি আদর্শ খাদ্য। এর খাদ্য ও পুষ্টিমান অত্যন্ত উন্নত। দুধে প্রায় ৮৭.৩% পানি, ৩.৪% প্রোটিন, ৩.৫% ফ্যাট, ০.৭০% খনিজ ও প্রায় ৫.১% কার্বোহাইড্রেট থাকে।
- দুধের প্রোটিন ৮০% ক্যাজিন, ২০% হোয়ে প্রোটিন। এতে সকল অত্যাবশ্যকীয় এমাইনো এসিড বিদ্যমান। দুধ দেহের পেশী গঠন ও ক্ষয়পূরণে কার্যকরী এবং খনিজ উপাদান শোষণে সহায়ক।
- দুধের চর্বিতে প্রায় ৭০% স্যাচুরেটেড ও ২৭% মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড থাকে। এতে আছে কনজুগেটেড লিনোলিক এসিড এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে ও হার্টের সুস্বাস্থ্যে সহায়ক।
- দুধের কার্বোহাইড্রেট গ্লুকোজ ও গ্যালাকটোজের সমন্বয়ে গঠিত ল্যাকটোজ, যা মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়ক ও দ্রুত শক্তিদায়ী।
- দুধের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড়, দাঁত, চুল, নখ ও ত্বকের গঠন, ক্ষয়পূরণ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
- দুধে রয়েছে ভিটামিন বি, যা রক্তশূন্যতা থেকে রক্ষা করে, বিং যা মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও ভিটামিন ডি যা মিনারেল মবিলাইজেশনে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- দুধের লাইপেজ এনজাইম চর্বি ভাঙতে, প্রোটিয়েজে এনজাইম প্রোটিন ভাঙতে, ল্যাক্টোপারঅক্সিডেজ এনজাইম ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস করতে সহায়ক।
- দুধে আছে ল্যাক্টোবেসিলাস ব্যাক্টেরিয়া যা পাকস্থলী ও ক্ষুদ্রান্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সহায়ক।
- দুধ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, হজম শক্তি বাড়ায়, ত্বক উজ্জ্বল করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, স্থূলতা কমায় এবং পানিশূন্যতা দূর করে।
- দুধ শিশুদের কোয়াশিয়রকর (Kwashiorkor), ম্যারাসমাস (Marasmus) নামক অপুষ্টিজনিত রোগ প্রতিরোধ করে এবং দুধ ও দুধজাতীয় খাবার বয়স্ক ব্যক্তিদের অস্টিওআর্থ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস অর্থাৎ হাড়ের দুর্বলতা ও হাড়ের ভঙ্গুরতাজনিত রোগ প্রতিরোধ করে।
- দুধের মধ্যে রয়েছে গুটাথিয়ন (Glutathione) নামক একধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন (Serotonin) নামক হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। আর এ সেরোটোনিন আমাদের মন ভালো রাখে, নিদ্রাহীনতা দূর করে এবং খাবারে রুচি বাড়িয়ে কর্মশক্তি বৃদ্ধি করে।