ভ্যাকসিন বা টিকা ফলপ্রসূ না হওয়ার কারণসমূহ
যেসব কারণে গবাদিপশুকে ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়ার পরও রোগ প্রতিরোধ হয় না তা নীচে বর্ণিত হলো।
১. পশুপাখির যে রোগের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে যদি ওই রোগের জীবাণু পূর্বেই পশুপাখির শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে তবে ওই ভ্যাকসিন কার্যকর হবে না বরং আরো দ্রুত রোগ দেখা দিবে।। এজন্য কোনো পশুপাখির খামার/ ঝাঁকে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়ার পর ওই খামার/ঝাঁকে কোনো সময়ই ওই রোগের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন দেয়া উচিত নয় ।
২. ভ্যাকসিনের গুণগতমান সঠিক না থাকলে অর্থাৎ নিম্নমানের হলে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেও কাজ হয় না। সাধারণত রোগজীবাণুর স্ট্রেইন, টাইপ এবং ভ্যাকসিনের স্ট্রেইন, টাইপ এক হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার পরও পশুপাখি রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
৩. ভ্যাকসিন ঠিকমতো বা পরিমাণমতো শরীরে প্রবেশ না করলে ভ্যাকসিন ফলপ্রসূ হয় না ।
৪. সুষ্ঠু পরিবেশ তথা যথাযথ তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন সংরক্ষণ না করলে ওই ভ্যাকসিন দেয়ার পরও রোগ দেখা দিতে পারে।
৫. জীবিত জীবাণু দিয়ে তৈরি ভ্যাকসিনের জীবাণুগুলো মৃত হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে।
৬. ভ্যাকসিন দেয়ার যন্ত্রপাতি পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত না হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে।
৭. খাবার পানির মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেয়ার সময় ক্লোরিনযুক্ত পানি ব্যবহার করা হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।
৮. ভ্যাকসিন পানির সাথে মিশানোর পর সাথে সাথে ব্যবহার করতে হবে এবং তা সংরক্ষণ করা যাবে না।
৯. ভ্যাকসিন ব্যবহারের সময় ভ্যাকসিন ফ্রিজ থেকে বের করার পর ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় আনার পর প্রয়োগ করতে হয়। প্রয়োগের পূর্বে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিতে হয়। বোতল খোলার পর গ্রীষ্মকালে ৪ ঘন্টা ও শীতকালে ৮ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে হয়। অন্যথায় ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে।
১০. যে ভ্যাকসিনের ব্যবহারের তারিখ শেষ হয়ে গেছে ওই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে কোনো ফল পাওয়া যাবে না।
১১. অসুস্থ ও দুর্বল পশুকে ভ্যাকসিন দিলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় না।